Wednesday, July 29, 2015

My homage to Dr . Abdul Kalam

 


 
Whenever a star falls , I see to the sky and think who am I ! What am I ! Or really am I anything at all to this big universe ?

In this world of fake glitterati , there are few mortals who have an aura around them . More than their lifetime , it is their demise that leave people speechless and in awe of their accomplishments . Amongst others I have been no exceptions . Their death always seem to me as the death of another star which has enlightened the sky with its own light .

The sudden demise of Dr. A.P.J .Abdul Kalam , again thrust me into that depth of void . Once again it made me stand in front of the mirror and wonder in admiration . He was a man of unparallel stature . Already having paved half of my life's way , when I look back to great personalities like Dr. Kalam , more and again I bow before the innumerous lessons they taught us through their own life . It is not their success but the secret behind their success that touches me the most . And all the secret stories reveal the same unfold truth - honesty , dedication and devotion . Yes , I respect him . I respect him not only as a scientist , but I honour him for the lifestyle he taught , the idealism he proved and the dream he dared to show . He taught us to love . Perhaps , that is why , despite holding the topmost position of a country , he was always a next door man whom we love , whom we miss . That is why he was the most beloved presindent of independent India .

"You have to dream before your dreams can come true ." ..this very simple word of him inspired me first .Since then , time and again his books and words inspired me and guided me to stand straight on the righest way .

In this flamboyant world he stood as an example of simplicity , honesty and modesty . His flawlessly successful career and his down-to -earth nature - is , perhaps a stark contrast we should learn from from him . He never cheated his work , he never cheated his principles . He was never loud yet ever stern a person . More than everything else , he was a man of positivity . Even being a political personality , the sludge of politics could never touch him simple because he was a man , beyond all these narrow-mindedness.

My heart -core respect for this man of talent , principles and dignity . I will always be on effort to implement at least one of your sayings and beliefs in my own life and spread them among my students and offsprings . I will always try to keep up positive spirit to make a better world , a better surrounding . We all love you , Sir . Pronaam .




 

Sunday, July 26, 2015



বর্ষা ঘনায় , শিমুলের ছায় -
একরাশ স্তব্ধতা নির্বাক নেমে আসে
থমথমে সরণী বেয়ে
কে ডাকে ?
ওই কালো মেয়েটাকে ?
সর্বনাশা গান গেয়ে।

অশনীর মত বিছিয়েছে চুল
রাত্রি কালো , গভীর ঘন
যেন বোকার মত করে ফ্যালা
গোপন কোনো ভুল।

বর্ষা নয় , বিপদ ঘনায়
নিশি ডাকে , হাতছানি দেয়
মত্ত হাসি হাসছে মেয়ে
নিজের প্রেমে ,
নিজেই মশগুল।

ক্ষেপছে মেয়ে , হাসছে দেখো
ঝলসে উঠছে চোখ
প্রলয় নাচছে ,
চাহনিতে ওর
লেলিহান  প্রতিশোধ।

নে মেয়ে তুই , সব বুঝে নে ,
হিসাব যত বাকি
আছড়ে পরে আয় রে নেমে
দে ধুয়ে দে এক লহমায়
পুঁজের মত জমতে থাকা
মহাকালের ফাঁকি।

অভিমানে , কালো মেয়ে ,
শরীর ভারী তোর্
কাঁদবি না তুই ,
কাঁদবি কেন ?
বাঁধ রে মনের জোর।

বড্ড বেশি শরীর বোঝে
পুরুষ পৃথিবী
করুক এবার ধারণ দেখি
রুদ্র নৃত্যে নাচতে থাকা
হাসির কোণে  মরণ আঁকা
সর্বরূপী বর্ষা রে তোর্
মত্ত প্রকৃতি।

অনেক তো দিন রাখলি ওদের
ভাবনাবিহীন সুখে
আর নয় তোর্ মিথ্যে বাঁচা
আয় নেমে আয় ঝঞ্ঝা যত
অনাচারের বুকে ।
 

Sunday, June 14, 2015



আমার প্রাণের নিভৃত গোপন ব্যথা 
বলব কারে ? সে জন কোথা ?
অন্তহীন নিরাকার নীরবতা। 
                              এ নিভৃত গোপন ব্যথা। 
 
 
সে যে ছুঁয়ে যায় শুধু দিয়ে যায় এক চকিত বিবশতা 
চকিতে এসে চকিতে মেলায় , নামহীন , ছায়াময়তা। 
 
 
আমায় শুধু চলতে হবে , মন জানে। 
 পায়ে পায়ে পিছুটান বাঁধবে অকারণে। 
 
 
সে যে ফিরবে না আর , বন্ধ এখন সব বারতা 
আকঁড়ে থাকা গভীর প্রাণে নিবিড় শূণ্যতা। 
                            এ নিভৃত গোপন ব্যথা। 
 

Friday, June 5, 2015

প্রতাপের বৌভাত 

একটি ধুসর স্মৃতি আলেখ্য 

 ........... রূপেন্দ্রনাথ দত্ত 



১৯৭৭ এর মে মাস।  প্রতাপের বাসি বিয়ের দিন , বিকেল বেলা। ইস্কুলে তখন বোধ হয় গরমের ছুটি। আমরা - অর্থাৎ , আমি , শচীন , মাণিক , জ্যোতি , গৌড়  এবং বোধ হয় আরও কয়েক জন - টিচার'স রুমে বসে আড্ডা মারছি। এমন সময়ে বিয়ের নতুন চটি - জুতো পরে [ যে চটি পছন্দ করার সময়ে কলেজ স্ট্রীটে প্রায় ট্র্যাফিক জ্যামের জোগাড়  হয়েছিল ] , হাতে ধুতির কোঁচা ধরে , আদ্দির পাঞ্জাবি গায়ে প্রতাপ হাজির।

আমি বললাম , " কি ব্যপার ? নতুন বৌ-কে ছেড়ে আজ তুমি এখেনে ? " প্রতাপ বল্লে - " আরে , তোমার খোঁজেই বেরিয়েছি। তোমাকে বাড়িতে না পেয়ে মনে হল এখানেই ঢু মেরে দেখি।  ভালই হলো - এখানে মানিক - টানিক সবাই রয়েছে। " এই না বলে পকেটে হাত ঢুকিয়ে কিছু টাকা বের করে আমায় বল্লে , " ধরো।  এতে সাড়ে  তিনশ' আছে।  কালকের অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করো। "

আমরা তো হতভম্ব। একটু ধাতস্থ হওয়ার পর ওকে জিজ্ঞাসাবাদ  ক'রে জানা গেল যে বামুনঠাকুর , যোগাড়ে , বাসনপত্তর - কিছুই ব্যবস্থাপত্তর হয় নি। ছাদে ম্যারাপ বাঁধার ব্যবস্থাও হয় নি।  নিমন্ত্রিতের সংখ্যা পয়ত্রিশ -চল্লিশের মতো , দু - পাঁচ জন বেশিও হতে পারে। কারণ , কাকে কাকে বলা হয়েছে , তার কোনো লিস্ট করা হয় নি। 

মানছি যে এই ২০১৫ -র তুলনায় চল্লিশ বছর আগে টাকার মূল্য ছিল অনেক অনেক বেশী , প্রায় অবিশ্বাস্য। কিন্তু তা হলেও সেই সাতাত্তর সালের বাজার দর এমন ছিল না যে ৩৫০ টাকায় চল্লিশ জনের বৌভাতের ভোজের আয়োজন করা যায়।  আমি একটু চিন্তা করে বললাম , " এক কাজ করলে কেমন হয় ? বাড়িতে লুচি আলুর দম তৈরী করা হোক।  তার সাথে দোকান থেকে কিনে এনে ফিস ফ্রাই , সন্দেশ , রসগোল্লা প্লেটে সাজিয়ে দিলেই হবে।  শেষে চা।  অনেকটা high tea এর মতো।  যদিও এটা পাত্পেরে ভরপেট খাওয়ানো নিশ্চই নয় , কিন্তু এর পর বাড়িতে গিয়ে খাবে , এমন লোক কমই আছে।  দেখতে শুনতে নেহাত খারাপ হবে না , আর এই টাকায় মোটামুটি ম্যানেজ হয়ে যাবে।  " আমার প্রস্তাব সবাই সোত্সাহে সমর্থন করলেও প্রতাপ veto প্রয়োগ করলো।  বল্লে , " ওসব ফক্কিকারি চলবে না।  যথারীতি পাত পেরে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে " আমি বললাম, "এই টাকায়  সেটা কিভাবে সম্ভব ? " প্রতাপ বল্লে , "ওসব আমি জানি না।  আমার কাছে যা ছিল দিয়েছি।  এখন যেমন ভাবে পারো ব্যবস্থা করো। নইলে হেভী বেইজ্জতি হবে " এই বলে বাবু কোঁচা দুলিয়ে বেরিয়ে গেলেন।

অগত্যা একটা প্ল্যান ছকে ফেলতে হলো। ঠিক হলো , প্রতাপের ঘরের বারান্দায় [এখন যেখানটায় রান্নাঘর , তখন ওটা ছিল না - ঘরেই রান্না হতো ] আমি রান্না করব , আর সবাই যোগাড়ে হবে।  খাওয়ানো হবে শম্ভুদার ঘরে এবং সম্ভব হলে ওদিকের বারান্দায়।  উনুন সমেত বাসনপত্রের লিস্ট ধরিয়ে সুশীলকে ধরিয়ে দেওয়া হলো , যাতে বোস ডেকরেটার্স থেকে পর দিন সকালেই সব প্রতাপের ওখানে পৌছে দেয়।  মেনু ঠিক হলো ভাতের সঙ্গে শুক্তো , নিরামিষ ডাল , ভাজা , মাছের মুড়ো দিয়ে ছ্যাঁচড়া , মাছের কালিয়া , চাটনি।  সাব্যস্ত হল ননীর দোকান থেকে নেওয়া হবে রাজভোগ আর দই।  আর আসবে বকুলদার দোকান থেকে পান। মেনু অনুযায়ী চাল , তেল , নুন , মশলাপাতি , কাঁচাবাজার ইত্যাদিরও ফর্দ তখনি করে ফেলতে হল । ঠিক হলো পরদিন সকালে ওই ফর্দ অনুযায়ী মালপত্র আমি-ই কিনে প্রতাপের ঘরে জমা করব , রান্না শুরু হবে দশটা - সাড়ে দশটা নাগাদ।  ওই সময়ে সবাই ওখানে হাজির হবে। 

বৌভাতের প্লান মাফিক কাজকর্ম শুরু হলো।  মুড অনেকটা পিকনিকের মতো। নানা কারণে অল্পবিস্তর রন্ধনকার্যের অভিজ্ঞতা আমার ছিল। কিন্তু যগ্গিবাড়ি কেন , নিজের বাড়ির কুটনো কোটার অভিজ্ঞতাও মাণিক , জ্যোতি , গৌরের ছিল না। আমার  নির্দেশে ওদের কূটনো কোটা প্রচুর হাস্যরসের যোগান দিল।  মাসিমা কিছুক্ষণ অন্তর চায়ের যোগান দিতে থাকলেন , প্রতাপ আমকে যোগান দিতে থাকলো পান আর আর সিগারেট।  হাসি , ঠাট্টা , গল্প গুজবের মধ্যে রান্না চলতে লাগলো।  নতুন বউ ঘরের মেঝেয় মাদুরের উপর ঘোমটা মাথায় বসে রইলেন। সুশীল আমাদের ফাই ফরমাশ খাটতে লাগলো। এই ভাবে দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে গেল। রান্নাও প্রায় শেষ , শুধু ভাত  চড়ানো বাকি  - সেটা হবে সন্ধের পর।

সন্ধের পর ভাত চাপলো।  নিমন্ত্রিতরা একে একে আসতে শুরু করলেন। নিমন্ত্রিতের মধ্যে যাঁদের কথা মনে পড়ছে ত্নারা হলেন সপরিবারে ধীরেনদা , প্রতাপের মামার বাড়ির  লোকজন , মিন্টু , চন্দন এবং ওর দিদি মালা।  আমাদের মধ্যে যারা বিবাহিত ছিলেন - তাঁরা সস্ত্রীক সন্তানসন্ততিসহ।

যেহেতু খাওনোর জায়গা সীমিত এবং এক ব্যাচে আট-দশ জনের বেশি বসানো যাবে না সেহেতু আটটা এক ব্যাচ খেতে বসানো হলো।  এই সময় শুরু হলো বৃষ্টি - বেশ জোরেই।  এই সময়েই মাণিক ফাটালো প্রথম বোমাটা।  আমায় এসে বল্লে , " খেতে তো বসানো হচ্ছে , খাওয়ার জল কোথায় ?" খেয়াল হলো - সত্যিই তো - সময় মত কল থেকে খাবার জল তুলে রাখা হয় নি।  যদিও একটু দুরেই টিউবওয়েল রয়েছে , ওই বৃষ্টির মধ্যে সেখান থেকে জল আনা সম্ভব নয়। অগত্যা আমি বল্লাম , " কাউকে কিছু না বলে নীচের বাইরের চৌবাচ্চা থেকে বালতি করে জল তুলে এনে , তাই দিয়ে কাজ চালা।  " প্রতাপের একতলার বাইরের চৌবাচ্চাটায় প্রায় সব সময়েই কলের জল পড়ত এবং সেই জল কেউ কখনো বন্ধ করত না।  চৌবাচ্চাটা শ্যাওলা ধরা হলেও জলে অন্য কোনো রকম নোংরা থাকত না। সৌভাগ্যবান ওই চৌবাচ্চার জলই বর - কনে নিমন্ত্রিতরা এবং আমরা সবাই সে রাতে পান করে ধন্য হয়েছি। .

দ্বিতীয় বোমা ফাটল রাত সোয়া ন'টা নাগাদ। সচীন বল্লে , " ফুলশয্যা তো  হবে , নতুন শয্যার কী ব্যবস্থা হয়েছে ?" খোঁজ নিয়ে কোনো সদুত্তর পাওয়া গেল না।  তক্ষুনি সেই বৃষ্টির মধ্যেই সচীন দৌড়লো হাতিবাগান বাজারে।  মিনিট পনের পরে দেখি সচিন ভিজতে ভিজতে ফিরছে, আর ওর পেছন পেছন মুটে আসছে , তার মাথায় প্লাস্টিক চাপা দেওয়া তোষক , চাদর বালিশের মোট।

প্রতাপের কপাল জোরে এবং ওপরওয়ালার কৃপায় রান্নাগুলো উতরে গিয়েছিল।  সুতরাং অতিথি আপ্যায়ন - নানা অসুবিধে [ বিশেষত স্থানাভাব ] সত্বেও , খুব খারাপ হলো না।  বামুন ঠাকুরের কপালে বেশ কিছু প্রশংসা জুটল।  ইতিমধ্যে মেঘে মেঘে রাত প্রায় সাড়ে দশটা বাজলো।  লাস্ট ব্যাচ খেতে বসেছে। আগে খেয়ে নিয়েছে এমন দু'একজন পরিবেশন করছে।  তখন খেতে বাকি মাণিক , আমি , মাসিমা। মাণিককে খেতে বসাতেই হবে নইলে ওরা [ অর্থাৎ মাণিক , খুকু এবং ঝুম্পা ] বাড়ি ফেরার লাস্ট বাস ধরতে পারবে না।  অথচ খেতে বসানোর কোনো জায়গা নাই।

necessity is the mother of invention - প্রবাদবাক্য টা যে কতটা সত্যি সেটা সেদিন আর একবার প্রমানিত হলো।  দেখা শম্ভুদার  ঘরে খাটের সামনে অল্প একটু জায়গা খালি আছে যেখানে কোনো রকমে দুটো পাত - পাড়া যেতে যেতে পারে , কিন্তু বসার কোনো জায়গা নেই। বিনা বাক্যব্যয়ে মাণিক আর আমি খাটের তলায় উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লুম , শুধু মাথা দুটো রইলো বাইরে। মুখের সামনে দুটি পাত পড়ল।  আমরা দুজন ভুজঙ্গাসনে প্রতাপের বৌভাতের ভোজন পর্ব সমাধা করলাম। 


 

Tuesday, June 2, 2015


বলেছিলে একলা থাকতে চাও -
বলেছিলে আমায় ছেড়ে যাও -
চলে গেছি।
চলে গেছি অন্য প্রান্তরে -
আমার আলোক তোমায় ছোঁবে না যেখানে।

বলেছিলে একলা থাকতে চাও -
বলেছিলে মুক্ত থাকতে দাও -
দিয়েছি মুক্তি
দিয়েছি বন্ধ দুয়ার খুলে -
আমার আগল তোমায় বাঁধবে না আর , এ জীবনে।

আবার ফুটবে কৃষ্ণচুড়ার ফুল
আবার ঝরবে ঘাসে
আবার নামবে বৃষ্টি
হিমেল পরশে।

কিন্তু আমি আসব না আর ফিরে
তোমার গানকে ঘিরে ঘিরে
ভালো আছ , ভালো থেকো - আমি বিহনে -
শুধু ভাবি ,
আজও কি কখনো আমার কথা ভাব ? ... অবসরে ? ..... নির্জনে ?


"মা !" আচম্বিক যেন এক সহসা ডাকে
ঘুম ভাঙ্গলো কুন্তীর। ধড়মড়িয়ে উঠে সে
দেখল চেয়ে চারিদিক।  কে ডাকে তাকে ?
যুধিষ্ঠির ? না তো ! সে না।  প্রশান্ত মুখশ্রী ,
বিভোর ঘুমে নাবালক জ্যেষ্ঠ পুত্র তার -
ঊর্ধমুখ , ঋজুদেহ , বুকেতে দু'হাত ;
যেন নিশ্চল ধ্যানে , পাহাড় - প্রতিম , স্থির ,
অবিচল।  গভীর নিদ্রার চেয়েও গভীর
সে মুখ।  যেন পরম সত্য , একমাত্র।

তবে কি ভীম ? সদা ক্ষুদার্ত পুত্র তার ?
আহা রে বাছা ! ক্ষুধা কি পেয়েছে তোর্ ?
ত্রস্ত -ব্যস্ত মাতা ভীমের কাছেতে যায়
তড়িঘড়ি।  না গেলেও হয়। পুত্র তার
বিপুলকায় ; জগত জানে সে ঘুমোলে ;
নাসিকায় তার বহু মহারথী একত্রে
বাস করে। ঘোর প্রলয় লাগে রাত্রিকালীন
ক্রোধোন্মত্ত গর্জনে আছড়ে ভাঙ্গে ঢেউ।
উত্থানে - পতনে হুঙ্কারে নিদ্রিত
তবু উদ্ধত , বলশালী ভীম।

সমরক্ষেত্র ছেড়ে , জননী চায় বাঁয়ে ,
অর্জুনের পায়ে।  যেন নিপূণ কারিগর
অতীব যতনে করেছে রচনা
সুলোচন ,গৌরবর্ণ , দীর্ঘকায়
মেধাসিক্ত এ তনুবর। হস্ত-পদতল
যেন গোলাপ-জল আঁকা। এ বালক যবে
পুরুষ-প্রবর হবে ; কত যে নারীমন
বিদ্ধ হবে নয়নবাণে। অর্জুন সুপ্ত।
তবে , ডাকে কে তারে ? কোন শিশুকন্ঠ
বারংবার বাজে জননীর কানে !

নকুল আর সহদেব - অভিন্ন সহোদর
পাশাপাশি শোয় - মিলি দুয়ে একসাথে -
গলা জড়াজড়ি ; আকুল আশ্রয় করি
একে -অপরে। একাঙ্গ যেন তারা।
সুনিপূণ , অনুগত।  জ্যেষ্ঠ সমীপে
সদা আনত।  ঘুমন্ত তাদের ওই
শিশুমুখ হেরি মাতৃবক্ষ জুড়ায়।

তবে কে ডাকে ! পঞ্চপান্ডব নির্লিপ্ত ,
নির্বাক।  তথাপি এ কোন আর্তডাক
খোঁজে তার জননীরে ? নিশীথ নিঃসীম ,
নিশ্ছিদ্র আঁধার। নির্জন এ নীরবতায়
নিঃশ্বাসও বুঝি রুদ্ধ , শব্দ না ফেলে।
ঘনঘোর নিশা , বনভূমি প্রেতকায়।
অশরীরী মন্দ্র বায়ু নিশ্চুপ বয়।
এমত কঠিন রাতে , কোন এ শিশু ?
পথহারা , মাতৃহারা , কার এ রোদন ?
পাগলপ্রায় ?

ওই শোনো ! ওই শোনো ! আবার সে ডাক -
"মা ! মা ! " কোথা বালক ! কোথা সে গুপ্তস্থান ?
কোথায় লুকিয়ে কাঁদে অজানা এ স্বর ?
উন্মাদিনীর ন্যায় ব্যগ্র - ব্যকুল রাজমাতা
এদিক সেদিক চায়।  অন্তর তার কেঁদে ওঠে
 বারে বার ।  " যেই হোস তুই , আয় কাছে আয় । "

সহসা আপন অন্তর স্থলে ঝটিতি
কে যেন দিল নাড়া। বাহির না অন্তর ?
কোথা থেকে আসে ধ্বনি ! বুকের মধ্যে
বাজে কার প্রতিধ্বনি ! কান পেতে শোনে ,
রমণী।  বাহিরে নয় গো বাহিরে নয়।
এ রোদন ভিতর হতে উথলে ওঠে।
গুমরিয়ে মরা বুকে - অন্তঃসলিলা
ফল্গু স্রোতের মত বহমান যে নদী -
আজ তারই জলস্ফীতি। দেখতে পেল মা।
ঘুমন্ত এক নিস্পাপ শিশুমুখ।  অপরূপ
সৌন্দর্য তার।  কোমল হাতের বন্ধ মুঠি ,
সদ্যজাত , নিদ্রিত।

এ মুখ তার রোজকার চেনা , প্রতিদিন ভাসে
চোখে।  যেন যুগ যুগ ধরি অহরহ
দোঁহারে খোঁজে দোহে। বক্ষেতে যেন
প্রস্তররূপ জমাট স্তব্ধতা।  হায় পোড়া মন !
তারও নীচে এক অশ্রু - জোয়ার সজোরে
দাবিয়ে রাখা। ঠেলে ঠেলে সে উগলে
ওঠে , বেরিয়ে আসতে চায়।  কাঁদবে কোথা ?
ঢাকবে কোথা মুখ ? কোন কাঁধে রাখবে মাথা ?
নয় নয় নয়।  যন্ত্রণা এ যে দেখাবার নয়।
জননী হেথায়  শুয়ে একলা কাঁদে , সেই
একটি শিশুর লাগি। বক্ষ - মাঝে যে জন
থাকে ; তবু যাকে বক্ষে যায় না ধরা -
একবার , শুধু একবার তাকে ক্রোড় দিতে চায়
সন্তাপী মাতৃমন। পাবে না জেনেও
পেতে চায় তাকে - প্রতিদিন , প্রতিক্ষণ।

পঞ্চপুত্র মাতা তিনি।  ধনে -মানে
নিপাট  সাজানো পূর্ণ নারী।  বিধাতা !
কিসের অভাব তার ? তবুও অভাব যেন
কোথাও কোনো বোধে।  লুকিয়ে রাখা
কোনো সুপ্ত গভীর লোভে।  বুভুক্ষু মা
ধারণ করতে চায় , অতি ক্ষুদ্র এক দেহ
সর্বসত্তায় আপন করতে চায় তাকে।
সকল পূর্ণতাতেও শূন্য কাঁদে মন।
পঞ্চপুত্র পরেও জননী কাঁদে -
একটি বার দেখার তরে , তার জ্যেষ্ঠ পুত্র ,
প্রথম প্রসব।  তার অনামী সন্তান।

 

Sunday, May 31, 2015



বৃষ্টি হয়ে নয়
আজ রাত কাটে অপমানে
বিবস্ত্র করে ভালবাসাকে  টেনে আনা হয়
হাটে বাজারে।
চেয়ে চেয়ে দেখি
কতদূর লাঞ্ছিত হতে পারে
কিশোরীর নিস্পাপ ভালোবাসা।
বিষোদ্গারে জনসমক্ষে লুন্ঠিত হয় সে।
জয়োদ্ধত পুরুষ !
নারীকে রণাঙ্গনে আহ্বিলে ?

Saturday, May 30, 2015



ঘন কালো মেঘে ডম্বরু বাজে -
জলছায়া আঁকা একলা পায় -
ভেজে মন , অচেতন
ফেরে না হারানো ধন
অঝোর ঝরা এ শ্রাবণ
আমার একলা শ্রাবণ।

ওড়না উড়িয়ে মেঘেরা আসে
ভরতে অবকাশ
তোমার চারপাশ
নিঃশব্দ সে কথন
শোনো কি তুমি ? মন ?
ছন্দপতন , হঠাৎ শ্রাবণ -
তোমার একলা শ্রাবণ।

মারবা থেকে মেঘ ?
নাকি মেঘ থেকে মল্লার ?
জানে না , এ সিক্ত পবন

সে তো ভেজা ভেজা লয়ে
গান বেঁধে যায় -
এই শোনা যায় , ওই সে হারায় -
মুষলধারে, এক নাগাড়ে -
তোমার -আমার দোঁহার শ্রাবণ। 
আমাদের একলা শ্রাবণ। 

Friday, May 29, 2015



আমায় তুমি নিষেধ করো না -
আমার পাশে অনেক মুখের ভীড় -
চেনা মুখগুলোর চিত্র-বিচিত্র বক্ররেখায়
আমি সৃষ্টি দেখতে পাই।

এই ক্যানভাসে রং বদলায় প্রতিক্ষণে
আপনমনে।
লালের সাথে মিশতে থাকে হলুদ
প্রেমের সাথে মিশতে থাকে রাগ
নীলের সাথে মিশতে থাকে কালো
স্বপ্নের সাথে মিশতে থাকে জাত।
আমি দেখতে থাকি মুগ্ধ চোখে -
রেখারা সব নিজের মত চলে ,
কৌশলে।
হাসতে থাকে ক্রোধ
কাঁদতে থাকে লোভ
মুহুর্তে বদলিয়ে যায় ক্ষণভঙ্গুর মন ,
অনুক্ষণ।
খুশির উর্দ্ধরেখা পলকে নেমে আসে
নিম্নখাদে ,
বিষাদে।
আচমকা তড়িৎ খেলে ধুসর , হতাশ চোখে
জীবন হাসে
মৃত মানবলোকে।

আপাত নিরীহ ভুরুর রেখা
নিঃশব্দে গোপন কথা বলে ,
পলে পলে।
সরলরেখায় জগতে থাকতে বোধ
জাগার আগেই দমিয়ে দিয়ে
বাঁকতে থাকে ধনুকরেখা
ফুঁসে ফুঁসে ওঠে দ্বেষ
কুঞ্চিত রেখা কারণ খুঁজে মরে ,
একলা ঘরে।
বড় তাড়াতাড়ি বদলাতে থাকে মন
বেহালার ছড় মীর টেনে যায়
ঋষভ -পঞ্চমে
রেখারা অঝোর ঝরে ঝরে ,
একলা ঘরে।
সেই রেখারাই ম্যান্ডোলীনে
শরীর নাচিয়ে তোলে
রেখারা দোলে
রেখারা দোলে।
কামুক চোখ মাপতে থাকে শরীর
ভাবুক মন ভাবতে থাকে চিত্তশুদ্ধি পথ
ক্যানভাস জোড়া গল্পের খেলা
শ্রুত -অশ্রুত ; বলা না বলা।

তুমি যেন আমায় নিষেধ করো না
বদলাতে থাকা চিত্রলেখায় আমি সৃষ্টি দেখতে পাই
দোহাই তোমায় ,
আমায় তুমি নিষেধ করো না। 

Thursday, May 28, 2015


তোমার শরীরে ধুলো কেন হবে ?
ধুলো এখন আমার শরীরময়
তোমার দেওয়া ভূষণ এখন 'ধুসর'
সেই রঙেতেই দৃষ্টি বিষাদময়।

ধুলোর চাদর ওড়াও তুমি রোজ
নিঃশব্দে তাই মেখে নিই গায়
ধুলোয় কাদায় বিবর্ণ আজ আমি
শব্দ নেই , নীরব , নিরুপায়।

তোমার হয়তো অনেক কথা আছে
এদিক ওদিক ঝাপটা মারে তারা
আমার শুধুই মৌন অনুভব
কবিতারা আজ স্তব্ধ , বাক্যহারা।

আজ তো আমি শতেক দোষে দোষী
ভালো , না হয় , সেটাই মনে রেখো।
ক্ষুদ্র আমি , হেরেই না হয় গেলাম ;
তোমার মত তুমি ভালো থেকো।